কিডনি পাথর এর সাইড ইফেক্ট মুক্ত চিকিৎসা ও বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি
কিডনি পাথর একটি সাধারণ কিন্তু কষ্টদায়ক স্বাস্থ্য সমস্যা যা কিডনিতে কঠিন পদার্থের সমাবেশের ফলে গঠিত হয়। সাধারণত, এটি তখনই ঘটে যখন শরীরের অতিরিক্ত খনিজ এবং লবণ কিডনিতে জমা হয়ে যায় এবং পর্যাপ্ত পানি অভাবে সেগুলো কঠিন আকার ধারণ করে। এই ব্লগে আমরা কিডনি পাথর কী, কীভাবে এটি হয়, এবং এর বিভিন্ন প্রকার নিয়ে আলোচনা করব।
English Post
নিন্মোক্ত ইউটিউব প্লেলিস্টে কিডনি পাথর সহ কতিপয় কিডনি, মুত্র, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড ও পুরুষ জননাঙ্গের রোগের সফল চিকিৎসার প্রমাণ দেওয় আছে
কিডনি পাথর কি? What is Kidney Stones?
কিডনি পাথর হলো কিডনির ভেতরে জমা হওয়া কঠিন পদার্থের একটি ধরনের খনিজ এবং লবণের মিশ্রণ, যা মূত্রনালীতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মূত্র প্রবাহে ব্যথা এবং সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
কিডনি পাথর কিভাবে হয়? How does Kidney Stones happen?
কিডনি পাথর তখনই গঠিত হয় যখন কিডনিতে খনিজ এবং লবণ জমতে শুরু করে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকার ফলে সেগুলো কঠিন আকার নেয়। পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, এবং ইউরিক অ্যাসিডের মতো পদার্থ জমা হতে থাকে এবং পাথরের মতো কঠিন হয়ে যায়।
কিডনি পাথর কত প্রকার ও কি কি? How many types of Kidney Stones are there?
কিডনি পাথরের প্রকার:
- ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর:
- এটি সবচেয়ে সাধারণ পাথর, যা অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট থেকে গঠিত হয়।
- ইউরিক অ্যাসিড পাথর:
- বেশি প্রোটিন গ্রহণ এবং কম পানি পান করার কারণে এটি হতে পারে।
- স্ট্রুভাইট পাথর:
- সংক্রমণের কারণে গঠিত হয় এবং সাধারণত দ্রুত বড় হয়ে যায়।
- সিস্টিন পাথর:
- এটি বংশগত কারণে হয় এবং কিডনি পাথরের খুব বিরল এক প্রকার।
কিডনি পাথর হওয়ার কারণসমূহ কি? What are the causes of Kidney Stones?
রোগ হওয়ার কারণ:
- কম পানি পান: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করলে খনিজ জমে যায় এবং পাথর গঠিত হয়।
- অতিরিক্ত প্রোটিন ও লবণ গ্রহণ: প্রোটিন ও লবণ বেশি খেলে ইউরিক অ্যাসিড এবং ক্যালসিয়াম পাথর বাড়ে।
- বংশগত কারণ: পরিবারে কেউ কিডনি পাথর থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
কিডনি পাথর রোগের লক্ষণসমূহ Symptoms of Kidney Stones
লক্ষণ:
কিডনি পাথর রোগে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়:
- তীব্র পিঠে বা পেটের ব্যথা: কিডনি পাথর মূত্রনালীতে আটকে গেলে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
- মূত্রে রক্ত: মূত্রনালীতে পাথরের কারণে রক্ত পড়তে পারে।
- মূত্রে দুর্গন্ধ বা ঘোলা মূত্র: সংক্রমণের কারণে মূত্রে দুর্গন্ধ বা ঘোলা ভাব হতে পারে।
- মূত্রে জ্বালা-পোড়া বা ঘন ঘন মূত্রত্যাগের প্রবণতা: কিডনি পাথরের কারণে মূত্র ত্যাগে সমস্যা হয়।
কিডনি পাথর রোগের ক্রম বিকাশ Progression of Kidney Stones
কিডনি পাথর ধীরে ধীরে কিডনিতে জমতে শুরু করে এবং বড় আকারে রূপান্তরিত হয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে পাথর মূত্রনালীতে আটকে যায় এবং মারাত্মক ব্যথা ও সংক্রমণের কারণ হয়।
কিডনি পাথরের ঝুঁকি ও রিক্স ফ্যাক্টর কি? What is the risk of Kidney Stones and Rix factor?
কিডনি পাথর ধীরে ধীরে কিডনিতে জমতে শুরু করে এবং বড় আকারে রূপান্তরিত হয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে পাথর মূত্রনালীতে আটকে যায় এবং মারাত্মক ব্যথা ও সংক্রমণের কারণ হয়।
ঝুঁকি ফ্যাক্টর:
- কম পানি পান করা: পর্যাপ্ত পানি না পানে কিডনি পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ে।
- অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিন গ্রহণ: বেশি লবণ ও প্রোটিন গ্রহণ ক্যালসিয়াম ও ইউরিক অ্যাসিড পাথর গঠনে সহায়ক।
- জেনেটিক ফ্যাক্টর: পরিবারে কিডনি পাথরের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বেশি।
- অস্বাস্থ্যকর খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং উচ্চ সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনি পাথর তৈরিতে সহায়ক।
কিডনি পাথর হলে করনীয় ও বর্জনীয় What to do and avoid if you have Kidney Stones
করণীয়:
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন: প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
- শাকসবজি এবং ফল খান: ফাইবারযুক্ত খাবার কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সহায়ক।
- প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম কিডনি পাথর প্রতিরোধে সহায়ক।
বর্জনীয়:
- অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিন এড়িয়ে চলুন: উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার কম খান।
- অ্যালকোহল এবং সফট ড্রিঙ্কস থেকে বিরত থাকুন: এসব পানীয় কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: প্রসেসড ফুড কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কিডনি পাথর রোগ নির্নয়ে কি কি ল্যাবটেস্ট করাতে হয়? What lab tests are required to diagnose Kidney Stones?
কিডনি পাথর নির্ণয়ে কিছু নির্দিষ্ট ল্যাব টেস্ট করা হয়, যা পাথরের ধরণ ও আকার বুঝতে এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে। নিচে কিডনি পাথর নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা উল্লেখ করা হলো:
ল্যাব টেস্টের তালিকা:
- ইউরিন এনালাইসিস (Urine Analysis):
- ইউরিন টেস্টে অক্সালেট, ক্যালসিয়াম, ইউরিক অ্যাসিড এবং সংক্রমণের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়। এটি কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা দেয়।
- ব্লাড টেস্ট (Blood Test):
- রক্তে ক্যালসিয়াম, ইউরিক অ্যাসিড এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পরিমাপ করতে এই টেস্টটি করা হয়। এটি কিডনির কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করতে সাহায্য করে।
- ইমেজিং টেস্ট (Imaging Tests):
- সিটি স্ক্যান (CT Scan): উচ্চ রেজোলিউশনের মাধ্যমে কিডনির পাথরের সঠিক আকার ও অবস্থান নির্ণয়ে সহায়ক।
- আল্ট্রাসাউন্ড: সহজলভ্য এবং দ্রুত পাথর সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়।
- ইউরিন কালচার (Urine Culture):
- সংক্রমণের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এই টেস্ট করা হয়, যা মূত্রনালীতে সংক্রমণ সম্পর্কে ধারণা দেয়।
- মেটাবলিক টেস্ট:
- বিভিন্ন ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে পাথর গঠনের কারণ নির্ণয় করা হয় এবং ভবিষ্যতে পাথর প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত খাদ্য ও জীবনধারা নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
কিডনি পাথর রোগীদের লাইফ স্টাইল কেমন হবে? What lifestyle should Kidney Stones patients follow?
কিডনি পাথর রোগীদের জন্য সঠিক জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। এটি পাথরের বৃদ্ধি রোধ করে এবং নতুন পাথর গঠনের ঝুঁকি কমায়।
জীবনধারা:
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
- প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত, কারণ পানি পাথর গঠনের ঝুঁকি কমায়।
- হালকা ব্যায়াম করুন:
- হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সহায়ক।
- মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন:
- যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন:
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল কিডনির ক্ষতি করে।
কিডনি পাথর রোগীরা কি খাবে এবং কি খাবে না What should Kidney Stones patients eat and avoid?
কি খাওয়া উচিত:
- ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফল:
- পালং শাক, শসা এবং আপেল কিডনির জন্য উপকারী।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার:
- মাছ, আখরোট এবং ফ্ল্যাক্স সিড কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- লেবু ও মধু:
- গরম পানির সাথে লেবু এবং মধু মিশিয়ে পান করলে পাথর গঠনের ঝুঁকি কমে।
কি খাওয়া উচিত নয়:
- অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিন:
- বেশি লবণ এবং প্রোটিন খেলে কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়ে।
- ক্যাফেইন এবং সোডা:
- ক্যাফেইন এবং সোডা পানীয় কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার:
- প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো কিডনিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
কিডনি পাথর রোগের জন্য ব্যায়াম ও থেরাপি Exercise and therapy for Kidney Stones
কিডনি পাথর রোগীদের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম এবং নির্দিষ্ট থেরাপি শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পাথরের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
ব্যায়াম:
- হাঁটা:
- প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটা কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং মূত্রনালীর চাপ কমাতে সহায়ক।
- যোগব্যায়াম:
- কিছু যোগাসন যেমন ভুজঙ্গাসন এবং কপালভাতি শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্গমনে সহায়ক।
- নিয়মিত স্ট্রেচিং:
- পিঠ ও তলপেটের পেশী শিথিল রাখতে কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম কিডনি পাথরের কারণে হওয়া ব্যথা কমাতে সহায়ক।
থেরাপি:
- পানির থেরাপি:
- পর্যাপ্ত পানি পান কিডনিতে জমে থাকা খনিজ নির্গমনে সাহায্য করে, যা পাথর কমাতে সহায়ক।
- গরম কম্প্রেস (Hot Compress):
- ব্যথা কমাতে গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে পিঠের নিচের অংশে হালকা চাপ দিন।
- আরোমাথেরাপি (Aromatherapy):
- ল্যাভেন্ডার তেল এবং পেপারমিন্ট তেল ব্যবহার করে মাসাজ করলে ব্যথা এবং চাপ কমাতে সাহায্য হয়।
কিডনি পাথর রোগের এলোপ্যাথি চিকিৎসা Allopathic treatment for Kidney Stones
কিডনি পাথরের ক্ষেত্রে এলোপ্যাথি চিকিৎসা বেশ কার্যকরী এবং এটি পাথরের আকার ও অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
এলোপ্যাথি চিকিৎসার ধাপ:
- ব্যথা নিয়ন্ত্রণে ওষুধ:
- NSAIDs (যেমন ইবুপ্রোফেন) এবং প্যারাসিটামল ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়।
- আলফা ব্লকারস:
- টামসুলোসিন (Tamsulosin) এর মতো ওষুধ মূত্রনালী প্রসারিত করতে সহায়ক, যা ছোট পাথরকে সহজে বের হতে সাহায্য করে।
- লিথোট্রিপসি:
- ESWL (Extracorporeal Shock Wave Lithotripsy) নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাথরকে ছোট ছোট টুকরোতে ভেঙে ফেলা হয়, যাতে মূত্রের মাধ্যমে তা বের হতে পারে।
- ইউরেটেরোস্কপি:
- ইউরেটেরোস্কপির মাধ্যমে মূত্রনালীতে ঢুকে পাথরটি সরিয়ে ফেলা হয় বা ভেঙে ফেলা হয়।
- সার্জারি:
- বড় পাথর বা জটিল ক্ষেত্রে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।
কিডনি পাথর রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা Homeopathic treatment for Kidney Stones
কিডনি পাথরের জন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হয় এবং এটি পাথরের আকার ও অবস্থার ওপর নির্ভর করে।
হোমিওপ্যাথি ওষুধ:
- বারবারিস ভলগারিস (Berberis Vulgaris):
- ডানদিকে ব্যথা এবং মূত্রনালীর জ্বালা-পোড়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ক্ষুদ্র কিডনি পাথর গলাতে সহায়ক।
- ক্যালক্যারি কার্ব (Calcarea Carbonica):
- বড় এবং ধীরে ধীরে গঠিত পাথরের জন্য কার্যকর। এছাড়াও, এটি সেই রোগীদের জন্য উপকারী যারা ঘাম বেশি করেন।
- লাইকোপোডিয়াম (Lycopodium):
- ডান পাশে তীব্র ব্যথা, যা উরুর দিকে নেমে আসে, এর জন্য উপকারী।
- ক্যান্থারিস (Cantharis):
- মূত্রত্যাগে জ্বালা-পোড়া অনুভূত হলে এবং পাথরের জন্য মূত্রনালীর সংক্রমণের উপসর্গ থাকলে ব্যবহৃত হয়।
- ন্যাক্স ভোমিকা (Nux Vomica):
- অতিরিক্ত মশলাদার খাবার ও অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে কিডনিতে পাথর হলে এটি কার্যকর।
কিডনি পাথর রোগের ভেষজ চিকিৎসা Herbal treatment for Kidney Stones
কিডনি পাথর রোগের জন্য ভেষজ চিকিৎসা রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। কিছু নির্দিষ্ট ভেষজ উপাদান শরীর থেকে পাথর গলাতে এবং বের করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ভেষজ উপাদান ও পদ্ধতি:
- অশ্বগন্ধা (Ashwagandha):
- অশ্বগন্ধা একটি শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ভেষজ, যা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
- গোলমরিচ ও মধু:
- গোলমরিচের গুঁড়া ও মধু মিশিয়ে খেলে কিডনি পাথর গলাতে সাহায্য করে।
- ধনে পাতা:
- ধনে পাতা পাথর গলাতে সহায়ক এবং কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
- বাঁশপাতা চা:
- বাঁশপাতার চা শরীর থেকে টক্সিন নির্গমনে সহায়ক এবং কিডনির ফাংশন বাড়ায়।
- গোলমরিচ, হলুদ, এবং আদা:
- এই তিনটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে পান করলে এটি কিডনিতে জমে থাকা খনিজ গলাতে সাহায্য করে।
কিডনি পাথর রোগীদে রান্নার উপকরণ ও পরিবেশ কেমন হবে? What will be the cooking materials and environment in patients with Kidney Stones?
কিডনি পাথর রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের খাদ্যাভ্যাস এমনভাবে হওয়া উচিত যা কিডনির স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে এবং নতুন পাথর গঠনের ঝুঁকি কমায়।
রান্নার উপকরণ:
- কম লবণ এবং কম প্রোটিন:
- কিডনি পাথর রোগীদের জন্য কম লবণ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ব্রাউন রাইস, এবং দানা শস্য উপকারী।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সবজি ও ফল:
- পালং শাক, শসা, আঙুর, এবং বেল কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং প্রদাহ কমায়।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার:
- সামুদ্রিক মাছ, আখরোট, এবং ফ্ল্যাক্স সিড কিডনির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক।
- লেবু এবং মধু:
- লেবু ও মধু দিয়ে গরম পানিতে পানীয় তৈরি করলে কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য হয়।
রান্নার পরিবেশ:
- পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ:
- রান্নাঘর সবসময় পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর থাকা উচিত। খাবার প্রস্তুত করার সময় পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন।
- দূষণমুক্ত ও ধূমপানমুক্ত:
- রান্নার সময় ধোঁয়া এবং দূষণ মুক্ত রাখতে ভেন্টিলেশন ব্যবহার করুন।
- কম তেল এবং মশলা:
- কিডনি পাথর রোগীদের জন্য কম তেল ও মশলাযুক্ত রান্না করা ভালো।
কিডনি পাথর রোগীদে স্কিন ক্রিম, লোশন, তেল ও সাবান কেমন হবে? How about skin creams, lotions, oils and soaps for Kidney Stones patients?
কিডনি পাথর রোগীদের শরীরে টক্সিন জমা হতে পারে, যা ত্বকে শুষ্কতা ও সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, ত্বকের জন্য উপযুক্ত পণ্য ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
স্কিন ক্রিম:
- ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম:
- গ্লিসারিন, অ্যালোভেরা, এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করুন, যা ত্বকের শুষ্কতা কমায়।
- অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ক্রিম:
- চামোমিল বা ক্যালামাইন সমৃদ্ধ ক্রিম ত্বকের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
লোশন:
- হালকা ও রাসায়নিকমুক্ত লোশন:
- নারকেল তেল ও শিয়া বাটার সমৃদ্ধ লোশন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ লোশন:
- ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ লোশন ত্বক সুরক্ষায় সহায়ক।
তেল:
- নারকেল তেল:
- প্রাকৃতিক নারকেল তেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সহায়ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী।
- জলপাই তেল:
- জলপাই তেল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক এবং প্রদাহ কমাতে কার্যকর।
সাবান:
- মৃদু এবং রাসায়নিকমুক্ত সাবান:
- এমন সাবান ব্যবহার করুন যা ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য নিরাপদ।
কিডনি পাথর রোগের কয়েকটি বিখ্যাত জার্নালের নাম ও ওয়েব লিংক A few famous Kidney Stones-related journals and web links
কিডনি পাথর রোগের জন্য বিখ্যাত কয়েকটি জার্নাল ও ওয়েব লিংক
- American Journal of Kidney Diseases
- বিষয়বস্তু: কিডনি রোগ, বিশেষত কিডনি পাথর এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কিত গবেষণাধর্মী নিবন্ধ।
- ওয়েব লিংক: American Journal of Kidney Diseases
- Clinical Journal of the American Society of Nephrology (CJASN)
- বিষয়বস্তু: কিডনি পাথরের কারণ, চিকিৎসা, এবং প্রতিরোধমূলক গবেষণাপত্র।
- ওয়েব লিংক: CJASN
- Journal of Urology
- বিষয়বস্তু: ইউরোলজি এবং কিডনি পাথর সম্পর্কিত গবেষণা ও চিকিৎসা।
- ওয়েব লিংক: Journal of Urology
- Nephrology Dialysis Transplantation
- বিষয়বস্তু: কিডনি ডায়ালাইসিস, ট্রান্সপ্লান্টেশন, এবং কিডনি পাথর সম্পর্কিত গবেষণা।
- ওয়েব লিংক: Nephrology Dialysis Transplantation
- Kidney International
- বিষয়বস্তু: কিডনি সম্পর্কিত জটিল রোগ এবং কিডনি পাথর নিয়ে গবেষণাধর্মী নিবন্ধ।
- ওয়েব লিংক: Kidney International
উপসংহার Conclusion
কিডনি পাথর এক ধরনের কঠিন পদার্থ যা কিডনিতে জমা হয়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
One thought on “কিডনি পাথর এর সাইড ইফেক্ট মুক্ত চিকিৎসা ও বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি”